ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি
১৯৯৩ সালের ১মে এ প্রতিষ্ঠানটি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান এ তিনটি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজাতীয় জনগণের মধ্যে স্মরণাতীত কাল হতে প্রচলিত যে সকল ঐতিহ্যবাহী উপজাতীয় সংস্কৃতি রয়েছে তার সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশ সাধনের লক্ষ্যে এবং এ ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে দেশের মূল সংস্কৃতির স্রোতধারার সাথে সম্মিলন ঘটিয়ে জাতীয় সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে রাঙ্গামাটি উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ ইনস্টিটিউট এতদাঞ্চলের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, বিকাশ সাধন ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। উল্লেখ্য, ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইনের অধীনে ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নং আইন পাশ হয়। এই আইন পাশ হওয়ার বলে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এর পরিবর্তে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠান আইন এর আলোকে নামকরণ করা হয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি।
ইন্সটিটিউটের কার্যক্রম সংক্ষেপে নিম্নরূপঃ
১। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় ভাষা, সাহিত্য, রীতি-নীতি, বিশ্বাস, আচার-অনুষ্ঠান ইত্যাদি বিষ্যে তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণা পরিচালনা।
২। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় এলাকায় কর্মরত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এ এলাকায় কাজের সুবিধার্থে সংক্ষিপ্ত উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা কোর্সের ব্যবস্থাকরণ।
৩। উপজাতীয় জীবনধারা ও লোক সাহিত্যের উপর লিখিত বিভিন্ন পাণ্ডূলিপি সংগ্রহকরণ।
৪। উপজাতীয় সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনধারা ইত্যাদি বিষয়ের উপর পুস্তক ও সাময়িকী প্রকাশনা।
৫। সাহিত্য, সংগীত, উপজাতীয় জীবনধারা ইত্যাদি বিষয়ের উপর সেমিনার, উৎসব, প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা।
৬। স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সঙ্গীত ও নৃত্য (Vocal & Instrumental) প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা।
৭। বিভিন্ন জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক আয়োজন, নাটক মঞ্চায়ন এবং ভিআইপি অতিথিদের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।
৮। বিভিন্ন আন্তঃজেলা ও আন্তঃ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।
৯। উপজাতীয় সঙ্গীতের রেকর্ডকরণ, সংরক্ষণ ও প্রচার করা।
১০। ঐতিহ্যবাহী উপজাতীয় চারু ও কারুশিল্প, পোশাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার, সঙ্গীত যন্ত্র, মুদ্রা, অস্ত্র-শস্ত্র ইত্যাদি প্রদর্শনযোগ্য সংগ্রহ ও এগুলো ইনস্টিটিউটের উপজাতীয় জাদুঘরে দর্শকদের প্রদর্শনের জন্য ব্যবস্থাকরণ।
ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম সুষ্ঠূভাবে সম্পাদনের জন্য ৪ (চার) টি শাখা রয়েছে।
শাখাগুলো হলোঃ
১। প্রশাসন ও অর্থ
২। সংস্কৃতি
৩। গবেষণা ও প্রকাশনা এবং
৪। জাদুঘর শাখা।
ইনস্টিটিউটের অর্গানোগ্রাম ও পদ সংখ্যাঃ
সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম অনুসারে ১ম শ্রেণী হতে ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্ত অনুমোদিত পদ এবং বর্তমানে কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা ২৫ জন।
তম্নধ্যে কর্মকর্তা ৭ জন এবং কর্মচারী ১৮ জন।