জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার সকলের। সীমাহীন গণ্ডি নিয়ে এর উৎপত্তি ও বিকাশ। বিশেষ করে আধুনিক গণগ্রন্থাগার সামাজিক বুদ্ধিবৃত্তি বিকাশের অভিভাবক। তাই দেখা যায় শিশু কিশোরদের মানস গঠন থেকে আরম্ভ করে জাতি গঠনের সকল স্তরে সকল প্রকার সেবা বিতরণে গণগ্রন্থাগার উদারহস্ত। সে জন্য গণগ্রন্থাগারকে জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার রাঙ্গামাটি স্থাপিত হয় ১৯৬৩ খ্রিঃ এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত হয় ১মে ১৯৯৩ সালে।
এটি এখন রাঙ্গামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্র বাজারফান্ড প্রশাসনিক ভবনের নীচ তলায় অবস্থিত। বর্তমানে লাইব্রেরীর সংগ্রহে ১৭০০০। এখানে সাধারণ জ্ঞান, দর্শন, ধর্ম, সমাজবিজ্ঞান, ভাষা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বিজ্ঞান, শিল্প ও কলা সাহিত্য, ইতিহাসসহ গুরুত্বপূর্ণ ও দূর্লভ বই রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ম্যাপ ছবিসহ নানা শিক্ষা উপকরণ রয়েছে। গণগ্রন্থাগার শুধু বই থেকে সেবা দেয়না বরং চলতি ঘটনা প্রবাহে সমৃদ্ধ সংবাদপত্র ও সাময়িকী থেকে মূল্যবান গবেষণানির্ভর প্রশ্ন ফিচার বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠকদেরকে সহযোগিতে করে যাচ্ছে। গণগ্রন্থাগারে (১) ইনফরমেশন সার্ভিস, (২) রেফারেন্স সার্ভিস, (৩) ইন্ডেক্সিং সার্ভিস ও (৪) এবেসট্রেকটিং সার্ভিস চালু আছে দৈনন্দিন জীবনে শিক্ষা, সমাজ ও জাতি গঠনে গণগ্রন্থাগারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তির চিন্তাধারা বিকাশে, অবসর মুহূর্তে বিনোদনের হাজারো লোকের উপকারে ব্রতী এই গ্রন্থাগার। শিক্ষার্থীরা গণগ্রন্থাগারে আসে, বই পড়ে। তাদের কাছে গণগ্রন্থাগার এমন একটি তীর্থস্থান যেখানে ক্লাশের পড়া শেখা যায়, শিক্ষক মহোদয়ের দেয়া এসাইনমেন্ট তৈরি করা যায়। বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত জনগণ তাদের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলে, গবেষক গবেষণার তথ্যের অসামঞ্জস্য বোধ করলে তথ্যাবলীর জন্য গণগ্রন্থাগারে আসেন।
আমাদের গ্রন্থাগারটি সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য জন্মলগ্ন থেকে সেবার দুয়ার উন্মুক্ত রেখে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জ্ঞানের খোরাক ও রুচি মাফিক বিনোদনের খোরাক জুগিয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত ও সমৃদ্ধ। এ শিক্ষা মানুষ বিভিন্ন শিক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় হতে জীবনের নির্দিষ্ট বয়সে অর্জনকে পূর্ণতা দানে সহায়তা করে। পাঠক ব্যবহারকারীর জ্ঞান অর্জন, স্বশিক্ষা, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, চিত্তবিনোদন, তথ্য সংগ্রহ, গবেষণা গ্রন্থাগার, গণগ্রন্থাগার, বিশেষ ধরণের গ্রন্থাগার, জাতীয় গ্রন্থাগার ইত্যাদি। তম্নধ্যে গণগ্রন্থাগারই জাতি, ধর্ম, বর্ণ, পেশা, বয়স নির্বিশেষে শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
সেজন্য গণগ্রন্থাগারকে জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়ে থাকে। গণগ্রন্থাগার সমাজের সকল স্তরের নাগরিকের প্রয়োজন অনুযায়ী সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, ধর্ম, ভাষা, বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের পুস্তক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে এবং সেগুলো জনগণ উন্মুক্তভাবে ব্যবহার করে জ্ঞানভান্ডার বৃদ্ধি করতে পারে। গণগ্রন্থাগার সদ্য উদঘাটিত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে জ্ঞান পিপাসুদের সাম্প্রতিক তথ্য লাভে জনগণের স্ব-শিক্ষার পথ সুগম করে দেয়। এ গণগ্রন্থাগারের বিভিন্ন প্রকারের ১৫৩৯৬ টি বই রয়েছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা বাংলা ৮টি, ইংরেজি ১টি, ১টি মাসিক, ১টি পাক্ষিক ও ৫টি সাপ্তাহিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন এ গ্রন্থাগারে রাখা হয়। এছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলের প্রকৃতি, মানুষ ও সংস্কৃতির উপর উল্লেখযোগ্য প্রশাসক ও গ্রন্থাগারে এসে পুস্তক ও প্রকাশনা পাঠ করে জ্ঞান লাভে সক্ষম হচ্ছেন।
জনবল
১ জন কর্মকর্তা এবং ৩ জন কর্মচারী নিয়ে গণগ্রন্থাগার পরিচালিত হয়।