তুলা উন্নয়ন বোর্ড রাঙ্গামাটি জোন ২২-০৮-২০০৭ ইং তারিখে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত হয়।
সুদূর অতীত হতে পার্বত্য এলাকার ঝুম পদ্ধতিতে পাহাড়ের ঢালে অন্যান্য ফসলের সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে পাহাড়ী তুলা চাষ হয়ে আসছে। মোগল আমলে এই তুলার আবাদী এলাকা কার্পাস মহল নামে পরিচিত ছিল। পূর্বে পার্বত্য এলাকার উপজাতীয় বাসিন্দারা তাদের নিজস্ব আবাদী তুলা দ্বারা পরিধেয় বস্ত্রাদি তৈরী এবং অবশিষ্ট তুলা বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো।
এ তুলা সম্প্রসারণে কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান না থাকায় তুলার আবাদ আস্তে আস্তে করে কমে আস্তে থাকে। তুলার আবাদ কমে যাওয়ার আরো কারণ হলো উপজাতিয় জনগনের মধ্যে সুতি বস্ত্রের প্রচলন হওয়া। পূর্বে ঝুমিয়া তাদের পরিধেয় বস্ত্রের অভাব পূরনের জন্য তুলার আবাদ করতো এবং এ জন্য প্রায় সব চাষীর ঘরে ঘরে হাতে বীজ ছড়ানোর জন্য কাঠের তৈরী যন্ত্র বা চরকা ছিল। পরবর্তী বছরে আবাদের জন্য যে বীজের দরকার হতো তা তারা নিজস্ব উৎস হতে পেতো। আধুনিক বস্ত্রের প্রচলন হওয়াতে চরকার প্রচলন কমাতে থাকায় চাষীরা তুলা বীজের অভাবের সম্মুখীন হয়। এভাবে আস্তে আস্তে ঝুমে তুলার আবাদ কমতে থাকে এবং দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়।
সরকার পাহাড়ী তুলার আবাদ সম্প্রসারণ, আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ,একর প্রতি ফলন বাড়ানো ও ঝুমিয়া চাষীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য রেখে ১৯৮১ সালে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিধি পার্বত্য এলাকায় সম্প্রসারন করে কাজ শুরু করে। পাহাড়ী এলাকায়তুলা ঝুমের একটি অর্থকরী ফসল বিধায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে এর ফলন বাড়ানো, গাছের সংখ্যা এবং ফুল ফল বৃদ্ধি করা যায় তারই প্রচেষ্টায় তুলা উন্নয়ন বোর্ড নিয়োজিত। পাহাড়ী এলাকায় তুলা চাষে স্থানীয় ঝুম চাষীগনকে উদ্ধুদ্ধ করণ এবং পাহাড়ী তুলার চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বৎসর প্রদর্শনী সথাপন ও মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন প্লট স্থাপন করা হয়। চাষীদের আর্থ-সামাজিক ও বিপনন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারীভাবে মূল্য ধার্য্য করে নগদ অর্থে বীজ তুলা নিজস্ব জিনিং মেশিনে বীজ ও আঁশ বিধি মোতাবেক বিক্রয় করা হয় এবং প্রাপ্ত বীজ পরবর্তী বৎসরে চাষীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। তুলা চাষে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাষীদেরকে প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়।
বর্তমানে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় ১০ টি ইউনিট অফিসের মাধ্যমে তুলা চাষ সম্প্রসারণের কাজ পরিচালিত হচ্ছে।ইউনিট গুলোঃ বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর, রাইখালী, রাজস্থলী, বরকল, রাঙ্গামাটি সদর, জুড়াছড়ি, বড়ইছড়ি, বাঘাইছড়ি ও কাউখালী।
জনবলঃ
বর্তমানে ইতুলা উন্নয়ন বোর্ডে ৩ জন কর্মকর্তা এবং ২৩ জন কর্মচারী রয়েছেন।