Wellcome to National Portal
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৮ মে ২০২৩

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ইতিহাস এবং কার্যাবলী

ভূমিকাঃ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত বরাবর উত্তরে ভারতে ত্রিপুরা রাজ্য থেকে দক্ষিণে মায়ানমারের আরাকান রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত যে পার্বত্য ভূমি রয়েছে তা পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে পরিচিত। ১৮৬০ সালে খ্রিঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। অতঃপর ১৯৮১ সনে বান্দরবান পার্বত্য জেলা ও ১৯৮৩ খ্রিঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সৃষ্ঠি হলে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি তিনটি নতুন জেলায় রূপান্তরিত হয়।

এ জেলার মোট আয়তন ৬,১১,১৬,১৩ বর্গকিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারী ও গৃহ গণনা ২০১১ অনুসারে মোট জনসংখ্যা ৫,৯৩,৭৯০ জন। মোট জনসংখ্যার ৩,১২,২৭৪ জন পুরুষ এবং ২,৮১,৫১৬ জন নারী। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৩ জন। মোট পরিবারের সংখ্যা ১,২৯,৩৫৬। এ জেলায় বাঙ্গালীসহ ৭টি উপজাতি বাস করে। বসবাসরত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলো হলো- চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, পাংখো, লুসায় এবং খিয়াং। জেলার মোট শিক্ষিতের হার ৪৩.৬০%।

পরিষদ গঠণঃ
১৯৮৯ সনে পার্বত্য জেলাসমূহের বিভিন্ন অনগ্রসর সংখ্যালঘু গোষ্ঠি অধ্যুষিত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নকল্পে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ১৯নং) অনুযায়ী রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ স্থাপিত হয়। এ উদ্দেশ্যে রাঙ্গামাটি রাঙ্গামাটি স্থানীয় সরকার পরিষদ বিল, ১৯৮৯ ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯ খ্রিঃ তারিখে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। বিলটি ৬মার্চ ১৯৮৯ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। সে বছর ২৫ জুন অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়ারম্যানসহ ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদ গঠিত হয়।

১৯৯৭ খ্রিঃ ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে সম্পাদিত পার্বত্য শান্তিচুক্তির আলোকে ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন ও এ জেলার সংখ্যালঘু অধিবাসীগণসহ সকল নাগরিকের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অধিকার সমুন্নত রাখা এবং সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনে ১৯৮৯ খ্রিঃ ৯নং আ..নে দ্বারা অনুযায়ী ‘‘ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ’’ ‘‘ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ’’ নামে রুপান্তরিত হয়েছে।

৩৩জন সদস্য এবং ১জন চেয়ারম্যান নিয়ে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠিত হয়েছে। প্রত্যেক পরিষদে ২জন উপজাতীয় এবং ১জন অ-উপজাতীয়সহ মোট ৩জন মহিলা সদস্যের পদ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

১। চেয়ারম্যান (উপজাতী) = ১জন।
২। সদস্য সংখ্যাঃ
(ক) অ-উপজাতীয় =১০জন।
(খ) চাকমা =১০ জন।
(গ) মারমা =০৮জন।
(ঘ) তঞ্চঙ্গ্যা =০২জন।
(ঙ) ত্রিপুরা = ০১ জন।
(চ) লুসায় = ০১জন।
(ছ) পাংখো =০১জন।
(জ) খিয়াং = ০১জন।
(ঝ) উপজাতীয় মহিলা সংরক্ষিত = ০২ জন।
(ঞ) অ-উপজাতীয় মহিলা সংরক্ষিত = ০১ জন।
সর্বমোটঃ ৩৪জন।

উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ অাহন ১৯৮৯ ও ১৯৯৭ সনের সংশোধিত ১৬ (ক)(২), (৪) উপধারা এবং ২০১৪ সনে সংশোধিত ৪ (২) উপধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কোন কারণে পূর্নাঙ্গ নির্বাচিত পরিষদ গঠিত হতে না পারলে ১ জন উপজাতীয় চেয়ারম্যান ৪ জন অ-উপজাতীয় সদস্য এবং ১০ জন উপজাতীয় সদস্য এর সমন্বয়ে অন্তর্বর্তীকালীণ পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। উক্ত আহনে অনুযায়ী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ১৪ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ গঠণ করা হয়েছে।
 
পরিষদের কার্যাবলীঃ
পরিষদ আইনের ধারা ২২ অনুযায়ী প্রথম তফসিলে বর্ণিত কার্যাবলীই পরিষদের কার্যাবলী। নিম্নে এর বিবরণ দেওয়া গেল।
(১) জেলার আইন-শৃংখলার তত্ত্বাবধান, সংরক্ষণ ও উহার উন্নতি সাধন;
 
(২) জেলার স্থানীয় কর্তৃপক্ষসমূহের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন; উহাদের উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা ও হিসাব নিরীক্ষণ; উহাদিগকে সহায়তা, সহযোগিতা ও উৎসাহ দান।
 
(৩)  শিক্ষা-
(ক) প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;
(খ) সাধারণ পাঠাগার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;
(গ) ছাত্রবৃত্তির ব্যবস্থা;
(ঘ) ছাত্রাবাস স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;
(ঙ) প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ;
(চ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক মঞ্জুরী প্রদান;
(ছ) বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা;
(জ) শিশু ছাত্রদের জন্য দুগ্ধ সরবরাহ ও খাদ্যের ব্যবস্থা;
(ঝ) গরীব ও দুস্থ ছাত্রদের জন্য বিনামূল্যে বা হ্রাসকৃত মূল্যে পাঠ্য পুস্তক সরবরাহ;
(ঞ) পাঠ্য পুস্তক ও শিক্ষা সামগ্রী বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ; 
(ট) বৃত্তিমূলক শিক্ষা; 
(ঠ) মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা; 
(ড) মাধ্যমিক শিক্ষা।
 
(৪)  স্বাস্থ্য - 
(ক) হাসপাতাল, ডাক্তারখানা, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র ও ডিসপেনসারী স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ; 
(খ) ভ্রাম্যমান চিকিৎসক দল গঠন, চিকিৎসা সাহায্য প্রদানের জন্য সমিতি গঠনে উৎসাহ দান;
(গ) ধাত্রী প্রশিক্ষণ;
(ঘ) ম্যালেরিয়া ও সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;
(ঙ) পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
(চ) স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন;
(ছ) কম্পাউন্ডার, নার্স এবং অন্যান্য চিকিৎসা কর্মীর পরিদর্শন;
(জ) প্রাথমিক স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ।
(৫) । জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং তৎসম্পর্র্কিত কর্মসূচী প্রণয়ন ও বান্তবায়ন, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষার প্রসার ইত্যাদি
 
(৬)। কৃষি ও বন-
(ক) কৃষি উন্নয়ন ও কৃষি খামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;
(খ) সরকার কর্তৃক  রক্ষিত নয় এই প্রকার বন সম্পদ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ; 
(গ) উন্নত কৃষি পদ্ধতি জনপ্রিয়করণ, উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ ও কৃষকগণকে উক্ত যন্ত্রপাতি  ধারে প্রদান;
(ঘ) পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঙ) গ্রামাঞ্চলে বনভূমি সংরক্ষণ;
(চ) কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোন ব্যাঘাত না ঘটাইয়া, বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত এবং কৃষিকার্যে ব্যবহার্য পানি সরবরাহ, জমানো ও নিয়ন্ত্রণ;
(ছ) কৃষি শিক্ষার উন্নয়ন;
(জ) ভূমি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার এবং জলাভূমির পানি নিষ্কাশন;
(ঝ) শস্য পরিসংখ্যান সংরক্ষণ, ফসলের নিরাপত্তা বিধান, বপনের উদ্দেশ্যে বীজের ঋণ দান, রাসায়নিক সার বিতরণ এবং উহার ব্যবহার জনপ্রিয়করণ;
(ঞ) রাস্তার পার্শ্বে ও জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বৃক্ষরোপণ ও উহার সংরক্ষণ।
 
 
(৭) পশু পালন-
(ক) পশুপাখী উন্নয়ন;
(খ) পশুপাখীর হাসপাতাল স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;
(গ) পশু খাদ্যের মজুদ গড়িয়া তোলা;
(ঘ) গৃহপালিত পশুসম্পদ সংরক্ষণ;
(ঙ) চারণ ভূমির ব্যবস্থা ও উন্নয়ন;
(চ) পশুপাখীর ব্যাধি প্রতিরোধ ও দূরীকরণ এবং পশুপাখীর সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;
(ছ) দুগ্ধ পল¬ী স্থাপন এবং স্বাস্থ্যসম্মত আস্তাবলের ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণ;
(জ) গৃহপালিত পশু খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ;
(ঝ) হাঁস মুরগী খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ;
(ঞ) গৃহপালিত পশু ও হাঁসমুরগী পালন উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ট) দুগ্ধ খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ।
 
(৮) মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন, মৎস্য খামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ, মৎস্য ব্যাধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ।
(৯) সমবায় উন্নয়ন ও সমবায় জনপ্রিয়করণ এবং উহাতে উৎসাহ দান।
 
(১০) শিল্প ও বাণিজ্য -
(ক) ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপন এবং উহাতে উৎসাহ দান; 
(খ) স্থানীয় ভিত্তিক বাণিজ্য প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;
(গ) হাটবাজার স্থাপন, নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণ; 
(ঘ) গ্রামাঞ্চলে শিল্পসমূহের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উৎপাদিত সামগ্রীর বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা; 
(ঙ) গ্রামভিত্তিক শিল্পের জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান; 
(চ) গ্রাম বিপনী স্থাপন ও সংরক্ষণ। 
 
(১১) সমাজকল্যাণ -
(ক) দুস্থ ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণ সদন, আশ্রয় সদন, অনাথ আশ্রয়, এতিমখানা, বিধবা সদন এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ; 
(খ) মৃত নিঃস্ব ব্যক্তিদের দাফন বা অন্তেষ্টিক্রিয়ার ব্যবস্থা করা; 
(গ) ভিক্ষাবৃত্তি, পতিতাবৃত্তি, জুয়া, মাদকদ্রব্য সেবন, কিশোর অপরাধ এবং অন্যান্য সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ; 
(ঘ) জনগণের মধ্যে সামাজিক, নাগরিক এবং দেশপ্রেমমূলক গুণাবলীর উন্নয়ন; 
(ঙ) দরিদ্রদের জন্য আইনের সাহায্য (লিগ্যাল এইড) সংগঠন; 
(চ) সালিশী ও আপোষের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ছ) দুস্থ ও ছিন্নমূল পরিবারের সাহায্য পুনর্বাসন; 
(জ) সমাজকল্যাণ ও সমাজ উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ। 
 
(১২) সংস্কৃতি - 
(ক) সাধারণ ও উপজাতীয় সংস্কৃতিমূলক কর্মকান্ড সংগঠন ও উহাতে উৎসাহ দান; 
(খ) জনসাধারণের জন্য ক্রীড়া ও খেলাধুলার উন্নয়ন; 
(গ) জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে রেডিওর ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ;
(ঘ) যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারী স্থাপন ও প্রদর্শনীর সংগঠন; 
(ঙ) পাবলিক হল ও কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং জনসভার জন্য স্থানের ব্যবস্থা; 
(চ) নাগরিক শিক্ষার প্রসার এবং স্থানীয় সরকার, পল¬ী উন্নয়ন ও পুনর্গঠন, স্বাস্থ্য সমাজ উন্নয়ন, কৃষি, শিক্ষা, গবাদি পশু প্রজনন সম্পর্কিত এবং জনস্বার্থ সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ের উপর তথ্য প্রচার; 
(ছ) জাতীয় দিবস ও উপজাতীয় উৎসবাদি উদ্যাপন; 
(জ) বিশিষ্ট অতিথিগণের অভ্যর্থনা; 
(ঝ) শরীরচর্চার উন্নয়ন, খেলাধুলায় উৎসাহ দান এবং সমাবেশ ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়া ও খেলাধুলার ব্যবস্থা করা; 
(ঞ) স্থানীয় এলাকার ঐতিহাসিক এবং আদি বৈশিষ্টসমূহ সংরক্ষণ; 
(ট) তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ; 
(ঠ) সংস্কৃতি উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থা। 
(১৩) সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নহে এই প্রকার জনপথ, কালভার্ট ও ব্রীজের নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন। 
(১৪)  সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণে নহে এমন খেয়াঘাট ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ।
(১৫)  জনসাধারণের ব্যবহার্য উদ্যান, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা ও উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ। 
(১৬)  সরাইখানা, ডাকবাংলা এবং বিশ্রামাগার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ। 
(১৭) সরকার কর্তৃক পরিষদের উপর অর্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। 
(১৮) যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি সাধন।
(১৯) পানি নিষ্কাশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, রাস্তা পাকাকরণ ও অন্যান্য জনহিতকর অত্যাবশ্যক কাজকরণ। 
(২০)  স্থানীয় এলাকার উন্নয়নকল্পে নক্সা প্রণয়ন। 
(২১) স্থানীয় এলাকা ও উহার অধিবাসীদের ধর্মীয়, নৈতিক ও আর্থিক উন্নতি সাধনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ।
(২২) পুলিশ (স্থানীয়)। 
(২৩)  উপজাতীয় রীতিনীতি অনুসারে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও উপজাতীয় বিষয়ক বিরোধের বিচার;
(২৪) ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা। 
(২৫) কাপ্তাই হ্রদ ব্যতীত অন্যান্য নদী-নালা ও খাল-বিলের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সেচ ব্যবস্থা। 
(২৬) পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন। 
(২৭) যুব কল্যাণ। 
(২৮) স্থানীয় পর্যটন। 
(২৯) পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত ইপ্রুভমেন্ট ট্রাষ্ট ও অন্যান্য স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান। 
(৩০) স্থানীয় শিল্প বাণিজ্যের লাইসেন্স প্রদান।
(৩১) জন্ম-মৃত্যু ও অন্যান্য পরিসংখ্যান সংরক্ষণ। 
(৩২) মহাজনী কারবার।
(৩৩) জুম চাষ।  
 
 
তহবিল গঠণ ও আয়ের উৎস
 
আইনের ৩৫ ধারা অনুযায়ী পরিষদ নিুলিখিত উৎস হতে তহবিল গঠন করিতে পারিবে।
ক. জেলা পরিষদের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ;
খ. পরিষদ কর্তৃক ধার্যকৃত কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবী বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;
গ. পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক পরিচালিত সকল সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত আয় বা মুনাফা;
ঘ. সরকার বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের অনুদান;
ঙ. কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
চ. পরিষদে অর্থ বিনিয়োগ হইতে মুনাফা;
ছ.পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য যে কোন অর্থ;
জ. সরকারের নির্দেশে পরিষদের উপর ন্যস্ত অন্যান্য আয়ের উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
পরিষদ কর্তৃক আরোপিত কর, রেইট, টোল, ফিস এবং সরকারের অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত আয়
 
আইনের ধারা ৪৪ অনুযায়ী পরিষদ নিম্নলিখিত উৎস হতে কর এবং টোল আদায় করতে পারে।
১. স্থাবর সম্পত্তির হস্তান্তরের উপর ধার্য করের অংশ। 
২. বিজ্ঞাপনের উপর কর। 
৩. পরিষদের রক্ষণাবেক্ষণাধীন রাস্তা পুল ও ফেরীর উপর টোল। 
৪. পরিষদ কর্তৃক জনকল্যাণমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য রেইট। 
৫. পরিষদ কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত স্কুলের ফিস। 
৬. পরিষদ কর্তৃক কৃত জনকল্যাণমূলক কাজ হইতে প্রাপ্ত উপকার গ্রহণের জন্য ফিস।
৭. পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত কোন বিশেষ সেবার জন্য ফিস। 
৮. অযান্ত্রিক যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন ফিস; 
৯. পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের উপর কর; 
১০. ভূমি ও দালান-কোঠার উপর হোল্ডিং কর; 
১১. গৃহপালিত পশু বিক্রয়ের উপর কর; 
১২. সামাজিক বিচারের ফিস; 
১৩. সরকারী ও বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর হোল্ডিং কর; 
১৪. বনজ সম্পদের উপর রয়্যালটির অংশ বিশেষ; 
১৫. সিনেমা, যাত্রা, সার্কাস ইত্যাদির উপর সম্পূরক কর; 
১৬. খনিজ সম্পদ অন্বেষণ বা নিষ্কাশনের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুমতি পত্র বা পাট্টা সূত্রে প্রাপ্ত রয়্যালটির অংশ বিশেষ; 
১৭. ব্যবসার উপর কর;
১৮. লটারীর উপর কর; 
১৯. মৎস্য ধরার উপর কর;
২০. সরকার কর্তৃক পরিষদকে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আরোপিত কোন কর।
উন্নয়ন পরিকল্পনা
 
আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী পরিষদ নিুলিখিতভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেঃ
১. পরিষদ, উহার এখতিয়ারভুক্ত যে কোন বিষয়ে উহার তহবিলের সংগতি অনুযায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন করিতে পারিবে।
২. সরকার কর্তৃক পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত কোন প্রতিষ্ঠান বা কর্মের ব্যাপারে পরিষদ নিজস্ব তহবিল হইতে বা সরকার প্রদত্ত অর্থ হইতে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন করিতে পারিবে।
৩. পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত কোন বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল উন্নয়ন কার্যক্রম পরিষদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করিবে।